এই নিয়ে তিনবার হল। বাংলা বোঝেনা নাকি? বামন হয়ে চাঁদে হাত দেবার সখ । রাজ্যের আদেখলাপনা... একটু মিষ্টি সুরে কথা বললেই হল, ভাববে “লারকি হাসি , তো ফাসি” । সাল্লা।
মনের হাজার বিরক্তি চেপে রেখেই হাসি হাসি মুখখানি ঘোরায় মল্লিকা। ছেলেটা এখনো দাড়িয়েই আছে অপেক্ষা করে। একটু অপরাধী অপরাধী ভাব নিয়ে, মাথা নিচু করে। দেখেই গা জ্বলে গেলো ওর । পেটের ভেতর থেকে প্রচণ্ড বিরক্তি আর অপছন্দ
পাক খেয়ে উঠছে । মুখের রেখা অসমান করার আগেই কোঁত করে গিলে ফেললো অসহ্য অনুভূতিগুলো ।
“ কাল তো আমার সময় হবেনা মহী , কাল নাচের ক্লাস আছে ওই টাইম টায়। তুই একটু নিজেই গিয়ে আনতে পারবি না প্লিজ ?”
মল্লিকার মায়াকাড়া চোখ দুটোর চাহনি তে মহী... মানে মহীরুহর বুকে সোজা টাইফুন
নামে। এত অসাধারণ আঁখির মালকিন এর আদেশ অমান্য করা কি আদতে সম্ভব? স্বয়ং ব্রহ্মারও সাধ্যি নেই। মহীর মতো নামের অনুপাতে যথেষ্ট ছোটখাটো ছেলে তো কোন ছার।
মহীরুহ কে এগিয়ে আশতে দেখে সভয়ে দুকদম পিছিয়ে যায় মল্লিকা। হাত টাত ধরবে নাকি আবার? ধ্যাত, কি সব আজগুবি চিন্তা, অমন ক্যালানে মার্কা ছেলের অত সাহস হলে তো আর দেখতে হতো না। অনেক কষ্টে মুখের হাসি হাসি ভাব টা বজায় রাখে ও ।
“ ওহ , সরি সরি, আমি ভেবেছিলাম তোর নাচের ক্লাস শুক্রবারে। রবিবারে শিফট হয়ে গেছে জানতাম না। কুছ পরোয়া নেহি মাড্যাম , আপকি খিদমাত মে বান্দা হামেশা হাজির”।
নাহ, শুধু ক্যালানে না, রামগাধা, বোকচন্দর আর কিছু বিশিষ্ট বিশেষণে অভিষিক্ত করে মনে মনে গজরাতে গজরাতে মহীর বুকে আরেকবারের মতো দুর্নিবার ঘূর্ণির সৃষ্টি করতে আরেকটি বিগলিত হাসি উপহার দিল মল্লিকা।
এবং ফলাফল তথৈবচ , মহীরুহ এই ভাঙে কি সেই ভাঙে । দুধে আলতা রঙের ফর্সা ডুমো ডুমো গালে গোলাপি আভা ছড়িয়ে যায়। বত্রিশ টি দাঁতের ৪৪০ ভোল্টের হাসি তে মহীর মুখে ছোটে খুশির ফোয়ারা ।
বাবা মায়ের বড় আদরের ছেলে মহী । খুব আহ্লাদ করে মা নিজের টুকটুকে ছেলের নাম রেখেছিলেন মহীরুহ । আশা ছিল এই ছেলে একদিন নামের মান রেখে বিশাল মহীরুহের মতই হবে। আশা অধরাই রয়ে গেল। না শরীরে
এ , না কর্মে , বালক মহীরুহ যুবক মহীরুহ তে পরিণত হতে পারল। গোলগাল সুশ্রী চেহারার পাঁচ ফুট চার ইঞ্চির গৌরবর্ণ মহীকে পুরুষালী বলাটা অপমানজনক ই বটে । হটাথ দেখলে নারী বলে বিভ্রম হলে দোষারোপ করাটা অনুচিত । ছেলেবেলা থেকেই মহীর নারীভাগ্য ইরশনিও। মহীর নিজের কাছেই এ এক ধাঁধা , মেয়েরা ওকে দেখলেই গাল টিপে আদর করে ব্যতিব্যস্ত করে তুলত। সব চেয়ে বেশী করত এলি দিদি। আঃ , এলি দিদি ...। দিদির শরীর থেকে ফুরফুর করে ভেসে আসা আঘ্রাণ ...লম্বা নিঃশ্বাস নেয় মহীরুহ বুক ভরে। ১৫ বছর বয়সেও এলি দিদির গলার নিচ পর্যন্ত শুধু ওর মাথা পৌঁছুত । দিদি আদর করে মাথার চুল ঘেঁটে দিত আর
দিদির বুকের ঠিক সমান্তরালে থাকতো ওর নাক । তারপর গাল টিপে “ উম্মম, কি
সুইট , কি আদুরে হয়েছিস রে তুই”। । ৫ টি ইন্দ্রিয়ের ৪ টী ততক্ষণে অকেজো । অপাংতেও কান । শুধু নাসা,
নাসিকা, বা নাক, হটাথ কুকুর কেও হার
মানানর শক্তি নিয়ে প্রকট হত। । বুকের খাঁজ
থেকে উঠে আসা সেই সুবাস ... সমস্ত অঙ্গ প্রত্যঙ্গ বিবশ করে রক্ত কণিকা গুল মাধ্যাকর্ষণের
টানে তখন নিচের দিকে ছুট ছুট ।
১৫ ছাড়িয়ে ২০ । মেয়েরা তখনো “ কি
আদুরে রে তুই” । ডায়লগ এর কোন হেরফের নেই। চাহনির ও । কিন্তু সে চাহনি সাধারণত মেয়েরা পোষা বিড়াল কে দেয়। মহীর
দুশ্চিন্তা হয়। কলেজে সব ছেলেগুলর সাথে কি ঘ্যামা ঘ্যামা মেয়ে ঘোরে ।
গার্লফ্রেন্ড না থাকলে আজকাল প্রেসটিজ এর হালুয়া হয়ে যায় । এদিকে মেয়ে গুলোর ও বাবা
কত ডিমান্ড । মেয়েদের যদি জিজ্ঞেস করা হয়, কেমন ছেলে চাই তোমার, তার উত্তরে পুরো বাংলা অভিধান হয়ে যাবে। মহীরুহর দুশ্চিন্তা ছাড়াও দুঃখ হয়। চেহারা আদুরে আদুরে বোকা বোকা হলে কি হবে, পেকে সে গেছে
অনেক আগেই। দুঃখ এই , পাকামি গুলো অলস
দুপুরে নিজের সঙ্গী হয়েছে , সঙ্গিনীর অভাবে। মন খারাপ করে ইংলিশ এর পাস ক্লাসে
পেছনের বেঞ্চে বসে কলমের পেছনটা নিয়ে জাবর কাট তে কাট তে ভাবে, “ হায়, শূন্য জীবন
, যখন শূন্য যৌবন, বোধহয় একা একাই গাছে পেকে বসে থাকতে হবে,পেকে পচেই যাবো হয়তো,
নয় তো একদিন টুপ করে মাটিতে পরে ছড়িয়ে যাব
, কারো ঝুড়িতে ওঠার সৌভাগ্য কি এ জীবনে আর
হবে”? কিন্তু ওই যে বলেনা, রাখে আল্লাহ ,
মারে কে । আল্লাহ, ভগবান , সর্বশক্তিমান
যেই হোক , সুদিন এলো অবশেষে । মল্লিকা চৌধুরী কাজল চোখ নিয়ে এসে বলল “ হাই
মহীরুহ” সাথে নিয়ে এলো পাতলা ঠোঁটের হাসির ঝিলিক। উড়ল মহীর মনের আকাশে আশার ফানুস ।
এরপর হরদম মল্লিকার আনাগোনা মহীরুহের
মোবাইল এ, মেসেজে, ক্লাস এ, ক্লাসের পরে , ক্লাসের আগে । কখনো কেমিস্ট্রি বোঝাতে ,
কখনো ল্যাপটপ এ এরর ঠিক করতে। মল্লিকার ডাকে কখনো চাকরির ফর্ম আনতে , কখনো বা শপিং
মলের মেয়েদের ট্রায়াল রুমের বাইরে একগাদা টপস আর জিনস নিয়ে।
“ কি গুরু,ছুপা রুস্তম বেরোলে , ভাল মাল পটিয়েছ , খসছে কেমন”?
ভ্রু নাচিয়ে দুহাতের দশটা
আঙ্গুলগুলোকে নির্মম ভাবে মটকাতে মটকাতে সুদীপ এসে মহীর এক কাঁধে হাত রাখল।
চারদিকে তখন আরও পাঁচ ছয় জোড়া উৎসুক চোখ ।
“ আরে ভাই, আমারটা তো ব্যাগ কিনল তিন
হাজার দিয়ে। শালা টিউশনির তিন ভাগের দুভাগ টাকা গন। গার্ল ফ্রেন্ড পোষা কি যেমন
তেমন কম্ম? তোমার তো মহী ডার্লিং আবার মল্লিকা চৌধুরী , মাইরি, ধনে বেঁচে আছো এখনো ?
মহীরুহর সারা মুখে সন্তুষ্টির ঢেউ
খেলে যায় । হুহ, এরা ভাবে টা কি? তার
মল্লিকা অমন নিচু মানসিকতার মেয়েদের মত
হবে? মল্লিকা খুউউউউব ভাল। কক্ষনো ওর পকেট কাটে না।
“ মল্লিকা অমন তোদের হাঘরে মেয়েদের
মতো নয়, টাকা পয়সার সম্পর্ক না আমাদের”।
“ তো কি সম্পর্ক চাঁদু? শারীরিক ?” বলেই চোখ টিপল
তন্ময়, আর বাকি সব খ্যা খ্যা হাসিতে ফেটে পড়ল ।
খটাং
।। মহীর মাথার কোন কোনের একটা প্যাঁচ কাটা স্ক্রু হটাথ করেই অভাবনিওভাবে সোজা নিজের ফুটোয় গিয়ে বসে গেলো । আজ চার মাস
ধরে মল্লিকা আর ওর বন্ধুত্ব । যাহ্ , একটু কম বলা হয়ে গেলনা? মল্লিকা তো মহী
বলতেই অজ্ঞান। “ মহী , এটা , মহী ওটা”, একদম বাচ্চা মেয়েটা , ও হাতে ধরে না করিয়ে দিলে ঠোঁট উল্টে বসে থাকে।
ইসস, কি নিষ্পাপ সুন্দর ওই ওলটানো ঠোঁট ।
এত মায়াকাড়া , তাই পরীক্ষার ফর্ম পূরণ
থেকে শিয়ালদার মোড়ে কম পয়সার জেরক্স দোকানে নোট্স কপি করানর জন্য মহী কেই
ছুট তে হয়।“ মহী তুই অসাধারণ , তুই না থাকলে যে আমার কি হতো” মল্লিকা নোট্স এর জেরক্স হাতে নিতে
নিতেই মহীর আঙুল ছুঁয়ে বলে। কিন্তু শারীরিক বলতে তো ওই ,আঙুল টুকু ছোঁয়া ,এর বেশি... এতদিন কি
ঘুমিয়ে ছিলও নাকি এলি দিদির মহীরুহ ?
“ একি বস, রাগ করলে নাকি?”
দিপান্তের ডাকে চমক ভাঙ্গে ।
“ ভিক্টোরিয়ায় বউনি হয়ে গেছে না এখনো
ঝুলছ বস”? বলেই আরেক প্রস্থ খ্যা খ্যা।
মহীরূহ আর এক মুহূর্তও দাড়ায় না। শক্ত পায়ে খ্যা খ্যা
হাসির উৎস কে পেছনে ফেলে এগিয়ে যায় । আরে, মল্লিকা ওকে এমন আস্ঠে পৃষ্ঠে
জড়িয়ে রেখেছে। কিন্তু কখনো কাছে আসার আমন্ত্রণ জানায়নি। হাজার চিন্তা ভিড়
করে আসে মহীর মাথায়। কেন জানায় নি? কিম্বা জানাতে ছেয়েছিল। মহীই মল্লিকার কাজল চোখে এমন হারিয়েছিল যে খেয়াল
করেনি। কিম্বা, ওই হয়তো কোন সুযোগ করে দেয়নি।ভাবল মহী । ইশসস, বড্ড ভুল হয়ে গেছে।
ও তো এক দিনও মল্লিকাকে ডেট এ যাবার প্রস্তাব জানায়নি।যাহ্ , গাধা গাধা গাধা,
নিজেকে শাপ শাপান্ত করতে করতে ঠিক করে ফেলে, আজই মল্লিকা কে ডেট এ যাবার কথা বলবে।
মল্লিকা এতোটা অবাক আজ পর্যন্ত হয়নি। কে
বি সি তে জিতে ১ কোটি টাকা পেলেও হয় ত এতটা অবাক হত না। দেখতে হাবাগোবা , অথচ পেটে
পেটে এত ? মোবাইল টা ধরে থম মেরে দাড়িয়ে থাকলো কিছুক্ষণ ।ওদিকে মহীরুহ ক্রমাগত বলে
যাচ্ছে হ্যালো হ্যালো হ্যালো । শুনতে পাচ্ছিস মল্লিকা?
কি দুঃসাহস ! নন্দন এ ডেট
মারার প্রপোসাল । তাও কি কাব্য। এটা কে ভেবেছিলো ঠিকঠাক পাবলিক, মিষ্টি
হাসিতেই কাজ হবে। সাল্লা, এত বসতে দিলে শুতে চাইছে । শিট ।
“ নন্দন? আমার ভীষণ পছন্দের জায়গা
নন্দন। তুই কি সুন্দর আমার পছন্দ অপছন্দের
কথাগুলো বুঝে ফেলিস মহী । তুই আমার সবচেয়ে ভাল বন্ধু”।
“শীতের হাওয়ায় লাগলো নাচন , লাগলো
নাচন
আমলকীর অই ডালে ডালে”।
আমলকী না, মহীরুহের ডাল পাতা
নির্বিশেষে সব জায়গায় নাচন লেগেছে মল্লিকার আদুরে কথাগুলিতে । ব্যাস, একবার সম্মতি
দিলে, আগুন লাগতেও দেরী হবে না। মল্লিকার আগুনে পুড়ে আংরা হতেও রাজি মহীরুহ ।
“ কিন্তু, আমায় যে শান্তিনিকেতন
যেতে হবে কাল। মাসিমনি খুব
অসুস্থ । আমি তোকে বলতেই যাচ্ছিলাম । খুব মন খারাপ রে। ক্লাস মিস হবে। কিচ্ছু নোট্স
নিতে পারবনা”।
মহীর প্রাণ টা কেঁদে ওঠে মল্লিকার মন
খারাপ শুনে । তাড়াতাড়ি বলে ওঠে “ এই, কেন চিন্তা করছিস , আমি আছি না? তুই যা মাসির
কাছে। দেখে আয়। নন্দন তো পালাচ্ছে না আর”।
ফোন রেখে শক্ত মুখে আঙুলের কড় গোনে
মল্লিকা। রক্তের স্বাদ পেয়েছে , এবার মানুষ খেকো হতে আর কতক্ষণ ? মহীরুহের মুখ টা
মনে করতেই গা গুলিয়ে আসে । আবার কড় গোনে । শিট ।
এবার শুরু হয় টম অ্যান্ড জেরির খেল। মহীরুহ ছুতো
পেলেই মল্লিকা কে কাছে পেতে চায় । মল্লিকার মাসিমনি পিসিমনি
ঠাকুরমা , কাকা, জ্যাঠা সবাই একবার
একবার অসুস্থ হয়ে গেলেন । তাতেও
মহীরুহের উৎসাহে ভাঁটা পরে না।
নিরুপায় মহী অবশেষে প্রাণ পাখিটিকে মল্লিকা
চৌধুরীর পায়ে সমর্পণ করেই দিল। মল্লিকা কড় গুনল। আর এক মাস । কণ্ঠে গরল, হাসি মুখ মল্লিকা হাত বাঁচিয়ে ,
ঠোঁট বাঁচিয়ে , মহীরুহের প্রেমের ভেলায় চড়লো । মহীর তখন...
“প্রথমত আমি তোমাকে চাই , দ্বিতীয়ত
আমি তোমাকে চাই ,
তৃতীয়ত আমি তোমাকে চাই, শেষ পর্যন্ত তোমাকে
চাই”।
পরীক্ষার আর একমাস বাকি,অথচ তারে জামিন পার এর ডিসলেক্সিয়া আক্রান্ত বাচ্চাটার মত মহীরুহের দশা । বইয়ের পাতার অক্ষর গুলো যেন হাওয়ায় উড়ে গেছে।
এখন সেই পাতায় শুধু মল্লিকার চোখ । মল্লিকার হাসি । হাত বাড়ায় ফোনের দিকে।
মল্লিকা, ও মল্লিকা। সুইচড অফ।
আহ, মনে পড়েছে , মল্লিকা পড়ছে । আমার
সোনা । পড়ুক । আমিও পড়ি ।
কেমিস্ট্রি তে ১৮, বাকিগুলোর অবস্থাও
অতিশয় করুণ । একি হল? কিকরে হল? মহীরুহর
কান্না পাচ্ছে। প্রচণ্ড কান্না পাচ্ছে।
চোখের জল লোকানোর আশ্রয় চাই। কে দেবে ওকে আশ্রয় ? মল্লিকা। হ্যাঁ ।
মল্লিকার কাছে ছুটল ও । পাগল হয়ে যাবার আগের মুহূর্তে ছুটল ।
“ মহী আমার এখন সময় নেই তোর সাথে কথা
বলার। পরে আসিস”।
“ মল্লিকা, আমার খুব মন খারাপ। খুব
কান্না পাচ্ছে। প্লীজ , একটু আমার পাশে বস”।
“ ন্যাকামো হচ্ছে না? দ্যাখ মহী
জ্বালাস নে। তুই পরীক্ষায় ফেল করেছিস সে ঠ্যাকা কি আমার নাকি যে আমার এখন বসে বসে
তোর কান্না মেটাতে হবে? যা ভাগ। বিদেয় হ”।
“ মানে? মল্লিকা আমরা একজন আরেকজন কে
ভালবাসি । এ সব কি ভুলভাল বকছিস”?
মল্লিকা হেসে গড়িয়ে পড়ল । সে হাসি আর
থামতেই চায়না । হাসতে হাসতে চোখ দিয়ে জল এসে গেল। মল্লিকা তবু হেসে যাচ্ছে ।
কোন রকমে বলল “ জোক অফ দা ইয়ার ।
যা যা, মাথায় জল ঢাল গে যা , হুঁশ ফিরবে
তোর। ভোঁদাই শালা , তোর সাথে করবে মল্লিকা চৌধুরী প্রেম?
মল্লিকার মুখে এমন মায়াদয়াহীন
নোংরা ভাষা আজ প্রথম শুনল মহীরূহ । আর
পারলো না সইতে । ঠাশ । নিয়ন্ত্রণ হীন ভাবে
চড় কষিয়ে বসল।
কলকাতার পাবলিক মারতে খুব ভালবাসে ।
বিশেষ করে যদি সেটা ফ্রি তে হয়। চড় , লাথি, কিল ঘুষি কিছুই বাদ যায়না । স্বয়ং
ব্রুস লি ভর করে এক এক জনের উপর। নারী কণ্ঠের আর্তনাদে সাড়া দিয়ে এসে যদি দেখা যায়
কাউকে রাম ধোলাই দেবার সুযোগ আছে, তখন
নিরীহ বাঙালির পউরশ গর্জে ওঠে । কি দরকার জানার কি ব্যাপার, কেন একটা লোক কে মারা হচ্ছে। সবাই পিটছে , তুমিও
একটু হাতের সুখ করে নাও। আম খাচ্ছ খাও না, গাছের খোঁজ কেন কর বাপু।
অসংখ্য মুস্থিবদ্ধ হাতের নীচে তলিয়ে
যেতে যেতে বুজে যাওয়া রক্তাক্ত এক চোখের
কোণা দিয়ে মহীরুহ দেখতে পায় শেষ বারের জন্য, সেই
অতি আরাধ্য ঠোঁটের কোনায় ঝুলতে থাকা এক চিলতে বাঁকা হাসি ।
No comments:
Post a Comment